প্রচন্ড তাপদাহে পাবনার বেড়া উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় শত শত গবাদি পশু গরু, ছাগল ও ভেড়া জ্বর, ঠান্ডা, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ায় খামারিরা দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত উপজেলায় প্রায় ৩০ টি গরুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বেড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, তারা এ পর্যন্ত তিনটি গরুর মৃত্যুর খবর পেয়েছেন। মারা যাওয়া গরু পরীক্ষা করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক প্রাণিসম্পদ গবেষণা কেন্দ্রের ল্যাবে পাঠিয়েছি। কোনো নতুন ভাইরাসে এসব গরু আক্রান্ত হচ্ছে কিনা তা নির্ণয় করার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, তাপপ্রবাহে প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনার করণীয় এ সংক্রান্ত লিফলেট ও গরমে গরু সুস্থ রাখার জন্য পরামর্শ ও দিক নির্দেশনামূলক একাধিক বৈঠক ও খামারিদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। চর নাকালিয়া, চর সাঁড়াশিয়া, হাটুরিয়া, নাকালিয়া, পেচাকোলার অনেক গো-খামারি জানান, এই ধরনের কোন লিফলেট অথবা কোন পরামর্শমূলক দিকনির্দেশনা এ পর্যন্ত প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে তারা পাননি। খামারিরা বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদের কোন সহযোগিতা না পেয়ে গ্রাম্য পশু চিকিৎসক ও হোমিওপ্যাথিক ওষুধের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
চর সাঁড়াশিয়া গ্রামের গো-খামারি আ.সাত্তার বেপারি, নূরুল দর্জি, আজিজ মোল্লাসহ অনেক খামারি বলেন, গত ১৫ দিনে চর নাকালিয়া ও চর সাঁড়াশিয়া এ দুটি গ্রামে কমপক্ষে ৭-৮ শ গরু, ছাগল আক্রান্ত হয়েছে। জানা যায়, এ রোগে আক্রান্ত গরুর গায়ে প্রথমে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও কাপুনি দেখা দেয়ার পরে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়ে এক পর্যায়ে গরু দুর্বল হয়ে মারা যায়।
খামারিরা জানান, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে চর সাঁড়াশিয়া সোনাউল্লার ৩টি গরু, রুহুল আমিন ১, সাত্তার বেপারি ১, আলতাব ১, দয়াল ১, নয়নপুর গ্রামের ২, জগন্নাথপুর ১, চর সাফুল্লা ২, চাকলা ১, হাটুরিয়া ১ টিসহ বেড়া পৌর এলাকার বাঙাবাড়িয়া ও সানিলা গ্রামের ৩ টি গরুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে উপজেলায় কমপক্ষে ৩০ টি গরু ও ৫টি ছাগল মৃত্যু হয়েছে বলে বিভিন্ন এলাকার খামারি ও গ্রাম্য পশু চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে।
অনেক খামারি গরু ছাগল আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্কিত হয়ে স্থানীয় হাট বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন। আবার অনেক কসাই এ রোগে আক্রান্ত গরু স্বল্পমূল্যে কিনে বাজারে জবাই করে বিক্রি করছেন। এতে বিভিন্ন এলাকায় এ রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।
টিএইচ